নেটওয়ার্ক কি?
একটি কম্পিউটার যখন এক বা একাধিক কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত হয়ে তথ্য আদানপ্রদান করে তখন থাকে নেটওর্য়াক বলে। নেটওর্য়াক করার জন্য ন্যূনতম দুটি কম্পিউটার প্রয়োজন।
নেটওয়ার্কে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
- LAN
- MAN
- WAN
Local Area Network (LAN): একই বিল্ডিং এর মাঝে অবস্থিত বিভিন্ন কম্পিউটার নিয়ে গঠিত নেটওয়ার্রকে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বলে। এই নেটওয়ার্ক এর ডাটা ট্রান্সফার গতি ১০এমবিপিএস। এই নেটওয়ার্ক এ ব্যবহিত ডিভাইসগুলো হলো রিপিটার, হাব, নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস ইত্যাদি।
Metropolitan Area Network (MAN) : একই শহরের মধ্যে অবস্থিত কয়েকটি ল্যানের সমন্বয়ে গঠিত ইন্টারফেসকে বলা হয় মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক । এ ধরনের নেটওয়ার্ক ৫০-৭৫ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। এই নেটওয়ার্কর ডাটা ট্রান্সফার স্পিড গিগাবিট পার সেকেন্ড। এ ধরনের নেটওয়ার্ক এ ব্যবহিত ডিভাইস গুলো হলো রাউটার, সুইজ, মাইক্রোওয়েভ এন্টেনা ইত্যাদি।
WAN(Wide Area Network) : দূরবর্তী ল্যানসমূকে নিয়ে গড়ে উঠা নেটওয়ার্ককে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক বলে। এ ধরনের নেটওয়ার্ক এর ডাটা ট্রান্সফার স্পীড ৫৬ কেবিপিএস থেকে ১.৫৪৪ এমবিপিএস। ওয়্যানের গতি ধীরে ধীরে পরিবর্তন হচ্ছে। এ ধরনের নেটওয়ার্কে ব্যবহিত ডিভাইসগুলো হলো রাউটার, মডেম, ওয়্যান সুইজ ইত্যাদি।
একটি নেটওয়ার্কে কম্পিউটারগুলো কিভাবে সংযুক্ত আছে তার ক্যাটালগকেই টপোলজি বলে । নেটওয়ার্ক ডিজাইনের ক্ষেত্রে টপোলজি বিশেষ ভূমিকা রাখে। টপোলজি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন- বাস টপোলজি, স্টার টপোলজি, রিং টপোলজি,মেশ টপোলজি ইত্যাদি। নীচে বিভিন্ন টপোলজিগুলো দেওয়া হলো:
এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারের ডাটা পাঠানোর জন্য যে ক্যাবল ব্যবহার করা হয় থাকেই নেটওয়ার্ক ক্যাবল বলে ।
নেটওয়ার্কিং করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্যাবল ব্যবহার করা হয় । যেমন:
- কোএক্সিয়াল ক্যাবল
- ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল
- ফাইবার অপটিক ক্যাবল
- প্যাচ ক্যাবল
- ইন্টারনেট ক্রসওভার ক্যাবল
লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কে কোএক্সিয়াল ক্যাবল ব্যবহার করা হয়। কোএক্সিয়াল ক্যাবল বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন- ৫০ওহম(আরজি-৮, আরজি-১১ আরজি-৫৮), ৭৫ ওহম(আরজি-৫৯) এবং ৯৩ ওহম(আরজি-৬২)। এ ক্যাবলের দাম অনেক কম। তামার তৈরি বলে ইএমআই সমস্যা রয়েছে।
ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল দুই দরনের হয়ে থাকে।
- শিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল
- আনশিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল
- শিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল
শিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলে প্রতিটি ট্যুইস্ট জোড়া থাকে একটি করে শক্ত আচ্ছাদনের ভেতর। ফলে ইলেকট্রিক ইন্টারফের্যান্স অনেক কম থাকে। এই ক্যাবলের ডাটা ট্রান্সফার স্পীড ৫০০ এমবিপিএস হয়ে থাকে।
- আনশিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল
আনশিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলে পেয়ারের বাইরে অতিরিক্ত কোন শিল্ডিং থাকে না কেবল বাহিরে একটি প্লাষ্টিকের জেকেট থাকে। এই ক্যাবলের ডাটা ট্রান্সফার রেট ১৬ এমবিপিএস।
এই ক্যাবলে তামার তারের চেয়ে কাচকে মিডিয়া হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক ইন্টারফের্যান্স নেই। এই ক্যাবলের ডাটা ট্রান্সমিসন স্পীড অনেক বেশী। ফাইবার অপটিক ক্যাবল দুই ধরনের হয়ে থাকে। সিঙ্গল মোড ফাইবার এন্ড মাল্টিমোড ফাইবার। এই প্রধান অসুবিধা হলো দাম অনেক বেশী এবং ইনস্টল করা কঠিন।
রিপিটার হলো এমন একটি ডিভাইস যা সিগন্যালকে এমপ্লিফাই করার জন্য ব্যবহার করা হয়। ১৮৫ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করার আগেই আপনি একটি রিপিটার ব্যবহার করে সেই সিগন্যালকে এমপ্লিফাই করে দিলে সেটি আরো ১৮৫ মিটার অতিক্রম করতে পারে। এটি কাজ করে ওএসআই মডেল এর ফিজিক্যাল লেয়ারে।
হাব হলো একাধিক পোর্ট বিশিষ্ট রিপিটার। এটি কাজ করে ইলেকট্রিক সিগন্যাল নিয়ে। নেটওয়ার্ক এড্রেস কিংবা নেটওয়ার্ক এডাপ্টারের ম্যাক এড্রস নিয়ে হাবের মাথাব্যাথা নেই। এটিও কাজ করে ওএসআই মডেল এর ফিজিক্যাল লেয়ারে।
ব্রিজ এমন একটি ডিভাইস যা একাধিক নেটওয়ার্ক সেগমেন্টকে যুক্ত করে থাকে। এটি প্রতিটি সেগমেন্ট বিভিন্ন ডিভাইসের হিসেব রাখার জন্য ব্রিজিং টেবিল তৈরি করে। ইহা ওএসআই মডেল এর ডাটালিংক লেয়ারে কাজ করে।
সুইজ হলো একাধিক পোর্ট বিশিষ্ট ব্রিজ।ইহা প্রতিটি নোডের ম্যাক এড্রেস এর তালিকা সংরক্ষন করে। ইহা ওএসআই মডেল এর ডাটালিংক লেয়ারে কাজ করে।
এক নেটওয়ার্ক থেকে আরেক নেটওয়ার্কে ডাটা পাঠানোর পদ্ধতিকে বলা হয় রাউটিং। আর রাউটিং এর জন্য ব্যবহুত ডিভাইস হলো রাউটার। ইহা ওএসআই মডেল এর নেটওয়ার্ক লেয়ারে কাজ করে।
বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্কসমূহকে যুক্ত করার জন্য ব্যবহিত ডিভাইসটি হলো গেটওয়ে। ইহা প্রটোকলকে ট্রান্সলেশন করে থাকে। ইহা ওএসআই মডেল এর ৭ লেয়ারেই কাজ করে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন